বাস্তুতন্ত্রের উপাদান (পাঠ ২)

অষ্টম শ্রেণি (দাখিল) - বিজ্ঞান - পরিবেশ এবং বাস্তুতন্ত্র | NCTB BOOK
2k
Summary

বাস্তুতন্ত্র মূলত দুটি প্রধান উপাদান - অজীব এবং জীব - নিয়ে গঠিত।

অজীব উপাদান: এরা প্রাণহীন উপাদান, যা দুই ধরনেরঃ

  • অজৈব বা ভৌত উপাদান: এতে খনিজ লবণ, মাটি, আলো, পানি, বায়ু, তাপ, আর্দ্রতা অন্তর্ভুক্ত।
  • জৈব উপাদান: মৃত ও গলিত দেহাবশেষ।

পরিবেশের জীবের বেঁচে থাকার জন্য এসব উপাদান অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

জীব উপাদান: পরিবেশের সকল জীবন্ত অংশ বাস্তুতন্ত্রের জীব উপাদান। এদেরকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়ঃ

  • উৎপাদক: সবুজ উদ্ভিদ, যারা সূর্যের আলোর উপস্থিতিতে খাদ্য তৈরি করে।
  • খাদক বা ভক্ষক: যারা উদ্ভিদ বা অন্যান্য প্রাণী খেয়ে বাঁচে। এর মধ্যে তিন ধরনের খাদক রয়েছে:
    • প্রথম স্তরের খাদক: উদ্ভিদভোজী, যেমন গরু, ছাগল।
    • দ্বিতীয় স্তরের খাদক: প্রথম স্তরের খাদকদের খায়, যেমন পাখি, ব্যাঙ।
    • তৃতীয় স্তরের খাদক: দ্বিতীয় স্তরের খাদকদের খায়, যেমন কচ্ছপ, মানুষ।
  • বিযোজক: মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহ পচনকারী অণুজীব, যাদের কার্যকলাপে মৃতদেহ থেকে জৈব ও অজৈব দ্রব্য তৈরি হয়।

এভাবে অজীব ও জীব উপাদানের পারস্পরিক ক্রিয়া বাস্তুসংস্থানের সচলতা নিশ্চিত করে।

তোমরা জেনেছ অজীব এবং জীব এই দুটি প্রধান উপাদান নিয়ে বাস্তুতন্ত্র গঠিত।

অজীব উপাদান : বাস্তুতন্ত্রের প্রাণহীন সব উপাদান অজীব উপাদান নামে পরিচিত। এই অজীব উপাদান আবার দুই ধরনের। (ক) অজৈব বা ভৌত উপাদান এবং (খ) জৈব উপাদান। অজৈব উপাদানের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার খনিজ লবণ, মাটি, আলো, পানি, বায়ু, তাপ, আর্দ্রতা ইত্যাদি। সকল জীবের মৃত ও গলিত দেহাবশেষ জৈব উপাদান নামে পরিচিত। পরিবেশের জীব উপাদানের বেঁচে থাকার জন্য এসব অজৈব ও জৈব উপাদান অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

 

জীব উপাদান : পরিবেশের সকল জীবন্ত অংশই বাস্তুতন্ত্রের জীব উপাদান। বাস্তুতন্ত্রের সকল জীব ও অজীব : উপাদানের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে তা তোমরা প্রথম পাঠে জেনেছ। বাস্তুতন্ত্রকে কার্যকরী রাখার জন্য এ সকল জীব যে ধরনের ভূমিকা রাখে তার উপর ভিত্তি করে এসব জীব উপাদানকে (ক) উৎপাদক, (খ) খাদক এবং (গ) বিযোজক এ তিন ভাগে ভাগ করা হয়।

(ক) উৎপাদক : সবুজ উদ্ভিদ যারা নিজেদের খাদ্য নিজেরা তৈরি করতে পারে তারা উৎপাদক নামে পরিচিত। যারা উৎপাদক তারা সূর্যের আলোর উপস্থিতিতে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় শর্করা জাতীয় খাদ্য তৈরি করে। যার উপর বাস্তুতন্ত্রের অন্যান্য সকল প্রাণী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল।

(খ) খাদক বা ভক্ষক : যে সকল প্রাণী উদ্ভিদ থেকে পাওয়া জৈব পদার্থ খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে বা অন্য কোনো প্রাণী খেয়ে জীবন ধারণ করে তারাই খাদক বা ভক্ষক নামে পরিচিত। বাস্তুতন্ত্রে তিন ধরনের খাদক রয়েছে।

প্রথম স্তরের খাদক : যে সকল প্রাণী উদ্ভিদভোজী তারা প্রথম স্তরের খাদক। এরা তৃণভোজী নামেও পরিচিত। তৃণভোজী প্রাণীদের মধ্যে রয়েছে ছোট কীটপতঙ্গ থেকে শুরু করে অনেক বড় প্রাণী। যেমন— গরু, ছাগল ইত্যাদি।

দ্বিতীয় স্তরের খাদক : যারা প্রথম স্তরের খাদকদেরকে খেয়ে বাঁচে। যেমন- পাখি, ব্যাঙ, মানুষ ইত্যাদি। এরা মাংসাশী বলেও পরিচিত।

তৃতীয় স্তরের খাদক বা সর্বোচ্চ খাদক : যারা দ্বিতীয় স্তরের খাদকদের খায়। যেমন- কচ্ছপ, বক, ব্যাঙ, মানুষ ইত্যাদি। এদের মধ্যে কোনো কোনো প্রাণী আবার একাধিক স্তরের খাবার খায়। এদেরকে বলা হয় সর্বভুক। আমরা যখন ডাল, ভাত, আলু ইত্যাদি খাই, তখন আমরা প্রথম স্তরের খাদক। আবার আমরা যখন মাছ, মাংস খাই, তখন আমরা দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্তরের খাদক।

(গ) বিযোজক : এরা পচনকারী নামেও পরিচিত। পরিবেশে কিছু অণুজীব আছে, বিশেষ করে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক যারা মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহের উপর ক্রিয়া করে। এসময় মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহে রাসায়নিক বিক্ৰিয়া ঘটে। ফলে মৃতদেহ ক্রমশ বিযোজিত হয়ে নানা রকম জৈব ও অজৈব দ্রব্যাদিতে রূপান্তরিত হয়। এসব দ্রব্যের কিছুটা ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক নিজেদের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। মৃতদেহ থেকে তৈরি বাকি খাদ্য পরিবেশের মাটি ও বায়ুতে জমা হয়। যা উদ্ভিদ পুনরায় ব্যবহার করে। এভাবে প্রকৃতিতে অজীব ও জীব উপাদানের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া হয়ে বাস্তুসংস্থান সচল থাকে।

Content added || updated By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...